শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫১ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির ঘোষিত কলম বিরতির কারনে দলিল সম্পাদন করতে আসা নাগরিকরা দলিল সম্পাদন না করেই বাড়ী ফিরে যেতে হয়েছে। ৩য় দিনের মতো বুধবারও কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। ফলে দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে জমি ক্রেতা বিক্রেতাদের। আর দলিল সম্পাদন না করাতে পারার কারণে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
৩য় দিনের মতো বুধবার সকাল থেকেই ভানুগাছ বাজারস্থ কমলগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের পার্শ্বে অবস্থিত দলিল লেখক সমিতির কার্যালয়ে প্রায় অর্ধশত দলিল লেখক অবস্থান করলেও কাজ করা থেকে বিরত ছিলেন। ফলে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা নাগরিকরা দলিল সম্পাদন করাতে পারেননি। সকাল থেকে সারা দিন অফিসে ছুটাছুটি করে দলিল না করেই বাড়ীতে ফিরে যেতে হয়েছে। এতে নাগরিকরা চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দুপুর থেকে কর্মবিরতি ঘোষণা করে দলিল লেখা বন্ধ রেখেছে উপজেলার দলিল লেখকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দলিল করতে আসা আদমপুরের জমির আলী বলেন, আমার ভাইকে বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকার প্রয়োজন। তাই জমি বিক্রি করতে চাই। স্থানীয় এক জনের সাথে দর সাব্যস্ত করে আজকে দলিল সম্পাদন করার পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ছিল। তাই বৃদ্ধ বাবা এবং মাকে নিয়ে অফিসে এসেছিলাম। এখন দেখি অফিসে আজ দলিল হচ্ছেনা। অনেক কষ্ট করে এসে কাজ না করেই বাড়ীতে চলে যেতে হচ্ছে। এদিকে দলিল না করে দেয়ায় জমির ক্রেতা ও আমাদেরকে টাকা দেয়নি। এখন বড়ই দুঃশ্চিন্তায় আছি।
কমলগঞ্জ স্টাম্প ভান্ডারের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখকরা কোন কাজ না করার কারনে স্টাম্প বা কোর্ট ফি কোন কিছুই বিক্রি করতে পারিনি।
মৌলভীবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুল মছব্বির এর সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার এর ঘুষ দূর্নীত ও অসদআচরনের কারনে দলিল লেখকরা পূর্ব ঘোষণা দিয়ে কর্ম বিরতি পালন করছে। এতে উপজেলার নাগরিকদের জন দূর্ভোগ এবং সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্বীকার করে বলেন, সাব রেজিষ্ট্রার ইচ্ছে করলেই বিষয়টি সমাধান করা যেত।
কমলগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সভাপতি পৌর কাউন্সিলর মো. বখতিয়ার আহমদ বলেন, কমলগঞ্জের সাব রেজিস্ট্রার রহমত উল্ল্যা লতিফ দলিল রেজিস্ট্রি থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। এছাড়া দলিল লেখকদের সাথে তার ব্যবহারও সম্মানজনক নয়। তাই তার বিরুদ্ধে গত সোমবার থেকে আমরা কর্মবিরতি পালন করে আসছি। আমরা এই দূর্ণীতিপরায়ন সাব রেজিষ্ট্রারকে আপসরান না করা পর্যন্ত কর্ম বিরতী কর্মসুচী অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে বুধবার মৌলভীবাজার জেলা রেজিস্টারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার রহমত উল্যøা বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা রেজিস্ট্রার এস, এম, সোহেল রানা মিলন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগন যেন আর ভোগান্তির শিকার না হয় দ্রুত সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।